Skip to main content

বই প্রিন্ট করতে গিয়ে

ইবুক পড়ে বাস্তবের বইয়ের মত আরাম পাওয়া যায় না। প্রিন্ট করে পড়তে পারলে ভালো হয়। কিন্তু
  • A4 সাইজের বিশাল কাগজের একদিকের পাতায় যে প্রিন্ট বের হয় তাতে পেপারব্যাক পড়ার মজা পাওয়া যায় না।
  • একটা কাগজে চারটার বদলে মাত্র একটা পৃষ্ঠা প্রিন্ট হওয়ায় কাগজের অপচয় হয়।
কাজেই সফট কপি থেকে পেপারব্যাকের মতো প্রিন্টেড বই বানানোর মিশনে নেমে পড়লাম।
মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে বুকলেট প্রিন্ট নামে একটা অপশন আছে। এর মাধ্যমে একেকটা কাগজে চার পৃষ্ঠা প্রিন্ট হয়, সেগুলোকে মাঝখানে ভাজ করে স্টাপলার করে দিলেই পেপারব্যাকের মত বই হয়ে যায়। কাজটা করতে হলে যে সব ধাপ অনুসরণ করতে হয় তা হলোঃ Page Layout > Margins > Custom Margins > Multiple Pages > Bookfold. তারপর প্রিন্ট দিতে হয়। যদি প্রিন্টার Autoduplex সাপোর্ট না করে তাহলে প্রিন্ট করার সময় Manual Duplex টিক দিতে হবে। অটো ডুপ্লেক্স হলো অটোমেটিক্যালি কাগজের উভয় পাশে প্রিন্ট করার ক্ষমতা। এটা না থাকলে সবগুলো কাগজের এক পাশে প্রিন্ট হওয়ার পর হাত দিয়ে সেগুলোকে উলটে আবার প্রিন্টার দিতে হয়, ফলে অন্য পাশেও প্রিন্ট হয়।
নিয়ম মতো সবই করলাম, কিন্তু কাজ হলো না। প্রিন্ট দেয়ার পরেও প্রিন্ট বের হয় না। সমস্যা কি ওয়ার্ডে নাকি প্রিন্টারে তাও বুঝলাম না। কিন্তু তাই বলে হাল ছেড়ে দিলে তো চলবে না। অন্য উপায়ের খোঁজ করলাম।
একটা সফটোয়ার আছে BookletMaker. নামালাম। এটার কাজ হলো একটা পিডিফ এর পাতাগুলোকে এমন ভাবে সাজানো যাতে সেটাকে স্বাভাবিকভাবে প্রিন্ট করলেই বুকলেট হয়ে বের হয়। Imageএকটা পিডিএফ দেখিয়ে দিলে তার পাতাগুলো আগে পরে নিয়ে নতুন আরেকটা পিডিএফ হিসাবে সেভ করে, সেটা প্রিন্ট করলেই কাজ হয়ে যায়। তবে সফটোয়ারটা ট্রায়াল ভার্শনে একবারে সর্বোচ্চ ১৬ পাতা সেভ করা যায়। অগত্যা পুরো বইকে ১৬ পাতার অনেকগুলো ফর্মায় ভাগ করে প্রিন্ট করতে হবে, সেটাও খারাপ না। তো প্রথমে ওয়ার্ড থেকে সেভ এজ পিডিএফ দিলাম। তারপর বুকলেটমেকার দিয়ে কাংখিত পিডিএফ বানালাম। এবার প্রিন্ট করার পালা।
প্রিন্ট করার সময় উভয় পাতায় প্রিন্ট করার জন্য আরেকটু কারিগরি করতে হবে। প্রিন্টারের ডায়লগ বক্সে ম্যানুয়ালি উভয় পাতায় প্রিন্ট করার যে অপশন আছে, সেটা নির্বাচিত করতে হবে। OK দিয়ে দিলাম প্রিন্ট। সব পাতার একপাশে প্রিন্ট হয়ে যাওয়ার পর সেগুলোকে আবার প্রিন্টারে দিতে হবে। তবে কাগজের অরিয়েন্টেশন চেঞ্জ করে দিতে হবে, নইলে কাগজের দুই দিকে পরস্পর উলটা করে প্রিন্ট হবে (প্রথমবার আমি একারণে ধরা খেলাম। তারপর বুঝে আবার ঠিকমত প্রিন্ট দিলাম।)। ব্যাস, তারপর এগুলোকে ভাজ করে পিন মেরে বা সেলাই করে বইয়ের মত বানিয়ে পড়া শুরু করা যাবে।

আপডেটঃ সার্চ করে জানতে পারলাম এই কাজ এডোবি রিডার দিয়েও এখন করা যায়। এডোবি রিডারের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়েছে সেই কবে! যাক, ট্রাই করে দেখতে হবে।
আপডেটঃ এডোবি রিডার ট্রাই করলাম। প্রিন্ট ডায়ালগে বুকলেট প্রিন্ট অপশন সিলেক্ট করতে হয়। এখানে আবার কাগজের অরিয়েন্টেশন চেঞ্জ করতে হয় না, এটা না জেনে আবার ধরা খেলাম। পরেরবার ঠিক মতো প্রিন্ট দিলাম। সমস্যা হলো প্রিন্ট করার সময় কাগজের এক পাশে গাটার রাখে, ফলে মাঝখানে ভাজ করলে কাগজের অন্যপাশের লেখা ভাজ অতিক্রম করে যায়। এটার সমাধান হতে পারে ওয়ার্ডে এডিট করার সময় উভয় পাশে মার্জিন বাড়িয়ে দেয়া। কিন্তু গাটার বাদ দেয়ার উপায় নাই, ধুর!

Comments

Popular posts from this blog

সেই ছোটবেলার জিনিসগুলো

ইয়ো-ইয়ো কোকাকোলার সাথে ফ্রি পাওয়া যেতো। আবার আলাদাও কিনতে পাওয়া যেত। নাম ইয়ো-ইয়ো। আঙ্গুলে সুতা আটকে এই জিনিস ঘুরানো হতো, যদিও অতো ভাল পারতাম না। প্রথম দেখি ১৯৯৩ সালের দিকে। টিনের পিস্তল এই রকম টিনের পিস্তলের সাথে ব্যবহারের জন্য বারুদ দেয়া কাগজ পাওয়া যেত। গুলি করলে ফটফট শব্দ হতো। বৈশাখী মেলা থেকে কিনেছিলাম। টিনের জাহাজ পানিতে চলে। এর মধ্যে কেরোসিন তেল রেখে তাতে কাপড়ের সলতে চুবিয়ে তার মাথায় আগুন দিতে হয়। সেই আগুনের ফলে ভটভট শব্দ তুলে পুকুরে জাহাজ চলতে থাকে। ইচ্ছা ছিল বৈশাখী মেলা থেকে এরকম একটা জাহাজ কিনবো, কিন্তু আর কেনা হয় নাই। টাকা ছিল না মনে হয়। ১৯৯৭ সালের কথা। ক্যাসিও ঘড়ি ক্লাস ফোরের বার্ষিক পরীক্ষায় রোল নম্বর এক হলে একটা ঘড়ি কিনে দেয়ার কথা ছিল। রোল নম্বর হল তিন। তাতে কি, ফাইভে বৃত্তি পরীক্ষা দিতে হবে, ঘড়ি না থাকলে সময় দেখবো কীভাবে? ঢাকা থেকে আব্বু নিয়ে আসলেন ক্যাসিও ডিজিটাল ঘড়ি। সারাদিন অকারণে হাত উঁচু করে সময় দেখি। মাঝে মাঝে শুধু ভাব নেয়ার জন্য ঘড়ির দিকে তাকাই। হাত নামানোর পর মনে হয়, আরে কয়টা বাজে সেটাই তো দেখা হয় নাই। সাথে সাথে আরেকবার ঘড়ি দেখি! জ্যামিতি বক্স ...

পলাশ ফুলের বাঁশি

ছোট বেলায় ফাল্গুনের এক বিকেলে একটা ছোট শহরের প্রান্তে হাঁটতে হাঁটতে দেখি গাছের নিচে সুন্দর কিছু ফুল পড়ে আছে। যার সাথে হাঁটছিলাম সে বললো এর নাম পলাশ ফুল। দেখতে চমৎকার, তবে কোন ঘ্রাণ নেই। কিন্তু ফুলের ভেতরে ধনুকের মত বাঁকানো সাদা টিউবটা বের করে তারও ভিতরের লাল অংশটা ফেলে দিলে এটাকে ঠোঁটে নিয়ে বাঁশির মত বাজানো যায়। এরপর থেকে পলাশ ফুল দেখলেই এরকম বাঁশি বানাতাম। অনেক বছর পরে আজ আরেক ফাল্গুনে এই সব মনে পড়লো আর কি। সেই শৈশব, সেই শান্ত ছোট শহর, সেই পলাশ ফুলের বাঁশি!